WB New Birth Certificate Rule: আমরা ইতিমধ্যেই অনেকেই জেনে গেছি জন্ম সার্টিফিকেট এর ভূমিকা কি রয়েছে।বিশেষ করে বিভিন্ন সরকারের সুবিধা পাওয়া থেকে শুরু করে নাগরিকত্ব প্রমাণ সবকিছুতেই জন্ম সনদেই একাই একশ হতে চলেছে। তাই অনেকে এখনো জানেনা যে নতুন করে জন্ম সার্টিফিকেট আবেদন কিভাবে করতে হয়। যদিও রাজ্য সরকার কর্তৃক নতুন আইন এনে এই জন্ম সার্টিফিকেট আবেদন প্রক্রিয়ায় কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে। আজকের এই প্রতিবেদনে আমরা এই সংক্রান্ত বিস্তারিত দেখে নিব –
আজকের এই প্রতিবেদনে জানবো কী কী বদল এসেছে জন্ম সার্টিফিকেট সম্পর্কিত এই নিয়মে, কারা আবেদন করতে পারবেন, কীভাবে ডিজিটাল সার্টিফিকেট ডাউনলোড করতে পারবেন এবং কোন কোন পরিষেবায় এটি বাধ্যতামূলক হতে পারে।
সম্পর্কিত পোস্ট
OBC নিয়ে নয়া মোড়! সুপ্রিম কোর্টের দোরগোড়ায় ঐতিহাসিক পদক্ষেপ! রইল বিস্তারিত - WB OBC Case Latest Updateনতুন নিয়মে জন্ম সার্টিফিকেট কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?
নতুন আইন অনুযায়ী, জন্ম সনদপত্র (Birth Certificate) এখন থেকে শুধু জন্মের তারিখ প্রমাণ করার জন্যই হবে না, বরং একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা পাওয়ার জন্য একমাত্র বৈধ নথি হিসেবে গণ্য হতে চলেছে।
নিচে দেখে নেওয়া যাক কোন কোন পরিষেবায় এটি এখন বাধ্যতামূলক:
- শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি ক্ষেত্রে
- ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য
- ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরির আবেদন করতে
- আধার কার্ডের আবেদন করতে
- সরকারি চাকরিতে নিয়োগ
- বিবাহ নিবন্ধন করতে
- পাসপোর্ট আবেদন (নতুন নিয়মে) করতে
এর ফলে জন্ম সনদপত্রের গুরুত্ব এখন অনেকগুণ বেড়েছে। আগে যেখানে ভোটার আইডি, স্কুলের ছাড়পত্র বা অন্যান্য নথিও ব্যবহার করা হত, সেখানে এখন জন্ম সনদই একমাত্র গ্রহণযোগ্য হচ্ছে বহু পরিষেবার ক্ষেত্রে।
জাতীয় পর্যায়ের কেন্দ্রীয় Birth-Death Database তৈরি হচ্ছে
জানা যায় নতুন আইনের আওতায় একটি কেন্দ্রীয় ডেটাবেস তৈরি করা হচ্ছে, যেখানে পুরো ভারতবর্ষের জন্ম ও মৃত্যুর তথ্য এক জায়গায় সংরক্ষিত রাখা হবে। এর ফলে একদিকে যেমন বিভিন্ন নথি যাচাই করা সহজ করা হচ্ছে , তেমনই নাগরিকের পরিচয় ও তথ্যের স্বচ্ছতা বজায় থাকতে চলেছে।
এই কাজ পরিচালনা করবে:
- Registrar General of India (RGI)
- রাজ্য সরকারের Civil Registration System (CRS) পোর্টালের মাধ্যমে তথ্য আপলোড করে রাখা হবে
- জন্ম বা মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তথ্য কেন্দ্রীয় ডাটাবেসে যুক্ত করা হবে
ডিজিটাল জন্ম সনদ: অনলাইনেই আবেদন ও ডাউনলোড
এই নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এখন থেকে সব জন্ম ও মৃত্যুর তথ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে রেকর্ড করা হবে। এর ফলে:
- জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে করা যাবে
- আবেদন করার পরে সার্টিফিকেট PDF আকারে ডাউনলোড করতে পারবেন
- সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি পরিষেবায় এই ডিজিটাল কপি বৈধ বলে গণ্য করা হবে
এই ডিজিটাল রূপান্তরের ফলে:
- অফিসে যাওয়ার ঝামেলা অনেক কমবে
- বিশেষ করে সার্টিফিকেট হারানোর ভয় থাকবে না
- পরিবেশ বান্ধব উদ্যোগে সাহায্য হবে
পাসপোর্টের জন্য এখন একমাত্র বৈধ প্রমাণ জন্ম সনদ
আগে পাসপোর্ট আবেদন করতে গেলে বয়সের প্রমাণ হিসেবে প্যান কার্ড, স্কুল সার্টিফিকেট, ড্রাইভিং লাইসেন্স ইত্যাদি জমা করতে হত। তবে ১ অক্টোবর ২০২৩ বা তার পরে যাঁদের জন্ম হয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে:
- জানা যায় জন্ম সনদপত্র ছাড়া অন্য কোনো নথি গ্রহণযোগ্য হবে না
- এটি হবে একমাত্র বৈধ বয়স প্রমাণপত্র হিসেবে গ্রহণ যোগ্য
যাঁদের জন্ম তারিখ ১ অক্টোবর ২০২৩-এর আগে হয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে আগের মতোই অন্যান্য ডকুমেন্ট থাকলে হবে।
কারা এখন জন্ম নিবন্ধন করতে পারবেন?
নতুন এই আইনে জন্ম নিবন্ধনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের পরিসর বাড়ানো হয়েছে। এখন শুধুমাত্র পিতা-মাতাই নয়, বিভিন্ন বিশেষ পরিস্থিতিতেও নিবন্ধন করতে পারবেন নিচের ব্যক্তিগন:
- দত্তক পিতা-মাতা (adoptive parents)
- সারোগেসি মা ও পিতা (biological parents through surrogacy)
- একক মা বা অবিবাহিত মা (single/unwed mother)
এর ফলে সমাজের নানা স্তরের মানুষকে আইনি স্বীকৃতি দিয়ে আরও ইনক্লুসিভ ও মানবিক করা হয়েছে জন্ম নিবন্ধন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে।
জন্ম নিবন্ধনে বিলম্ব হলে কী হবে?
নতুন নিয়মে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে:
- বাচ্চা জন্মানোর ২১ দিনের মধ্যে নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে
- নির্ধারিত সময়ের মধ্যে না করলে তা বিলম্বিত নিবন্ধন হিসেবে ধরা হতে পারে
- বিলম্বিত নিবন্ধনে অতিরিক্ত প্রমাণ ও অনুমোদনের প্রয়োজন হতে পারে বলে জানানো হয়
এই কারণে অভিভাবকদের দ্রুত জন্ম নিবন্ধনের উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে ।
নাম সংযোজন সংক্রান্ত নিয়ম
অনেক সময় বাচ্চার জন্মের সময় নাম ঠিক থাকে না। এই বিষয়টি মাথায় রেখে এই আইনটি বলছে:
- জন্মের সময় যদি নাম না দেওয়া হয়,
- তাহলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নাম সংযোজন (Name Inclusion) করার সুযোগ থাকবে আপনার হাতে
- এই পরিবর্তনও ডিজিটালি রেকর্ড হবে এবং নতুন সার্টিফিকেট ইস্যু করা হতে পারে
নতুন জন্ম সার্টিফিকেটে ধর্মের উল্লেখ
নতুন ফর্ম অনুযায়ী:
- সন্তানের পিতামাতা উভয়ের ধর্ম আলাদা করে উল্লেখ করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে এখানে
- এটি ঐচ্ছিক কি না, তা রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকার নির্ধারণ করতে পারে বলে উল্লেখ
এই ধারা নিয়ে ভবিষ্যতে বিতর্ক তৈরি হতে পারে, তবে এখনও পর্যন্ত এটি বাধ্যতামূলক করা হয়নি বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
এই পরিবর্তন কীভাবে নাগরিকদের উপকারে আসবে?
নতুন এই আইনের ফলে সাধারণ নাগরিকরা নিচের সুবিধাগুলি পাবেন:
- একক সার্টিফিকেট, বহু পরিষেবা: বারবার আলাদা আলাদা নথি জমা দেওয়ার প্রয়োজন হয় না
- ভুয়ো নথির সমস্যা কমবে: একমাত্র কেন্দ্রীয় ডাটাবেস থেকে যাচাইযোগ্য হবে
- ডিজিটাল রেকর্ড, দ্রুত সার্ভিস: সবকিছু অনলাইন হওয়ায় এখন সময় ও খরচ অনেক কমবে
- ভবিষ্যতের পরিচয় ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী হবে: আধার, ভোটার, ড্রাইভিং লাইসেন্স ইত্যাদির সাথে সংযুক্ত করা যাবে
জন্ম সার্টিফিকেট সম্পর্কিত নতুন নিয়মের সংক্ষিপ্তসার
বিষয়ের নাম | নতুন নিয়ম |
---|---|
সার্টিফিকেট প্রযোজ্যতা | শিক্ষা, ভোটার, আধার, পাসপোর্ট, বিবাহ, চাকরি ইত্যাদিতে বাধ্যতামূলক |
নিবন্ধনের সময়সীমা | ২১ দিনের মধ্যে আবশ্যিক করা হয় |
ডিজিটাল আবেদন | অনলাইন আবেদন ও ডাউনলোড করা যাবে |
পাসপোর্ট আবেদন | শুধুমাত্র জন্ম সনদই বৈধ প্রমাণ হবে |
নাম সংযোজন | জন্মের পরে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনুমোদিত হবে |
দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি | পিতা-মাতা, দত্তক অভিভাবক, একক মা, সারোগেট মা-বাবা |
কেন্দ্রীয় ডেটাবেস | Registrar General of India ও CRS দ্বারা নিয়ন্ত্রিত |
আানাদের দেশে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন, ২০২৩-এর এই পরিবর্তনগুলি শুধু একটা নিয়ম নয়, বরং ডিজিটাল এবং স্বচ্ছ নাগরিক পরিষেবার এক নতুন অধ্যায়ও বটে। জন্ম সার্টিফিকেটকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠছে নাগরিকতার ডিজিটাল ভিত্তি ও নানা পরিষেবা।
দ্রষ্টব্য: জন্ম সনদ সম্পর্কিত আবেদন ও তথ্য জানার জন্য নিজের রাজ্যের CRS পোর্টাল বা স্থানীয় পৌরসভা/পঞ্চায়েত অফিসের ওয়েবসাইট ব্যবহার করে দেখে নিবেন।

Aitpune is a experience content writer in various niches. I have 5 years experience in the field of content writing specially Bengali language. But i also work in English. So if any error done by me please forgive me.Thank You