সামান্য জমি থাকলে 10 হাজার দিচ্ছে মমতা সরকার! সঙ্গে 2 লক্ষ টাকার বিনামূল্যে বীমা – WB Govt Scheme

WB Govt Scheme: আমরা অনেকে জানি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম সফল এবং জনদরদি প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম হল কৃষক বন্ধু (Krishak Bandhu) প্রকল্প। ২০১৯ সাল থেকে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের মাধ্যমে চলতি ২০২৫ সালের খরিফ মরসুমেও রাজ্যের লক্ষ লক্ষ কৃষকের অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছে যাচ্ছে সহায়তা। বড় কথা হলো সরকার এই প্রকল্পে আর্থিক সহায়তার পরিমাণ দ্বিগুণ করে দিয়েছে – এখন বছরে মিলছে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা দুই কিস্তিতে অন্যদিকে 2 লক্ষ টাকার বীমা

রাজ্য সরকারের এই প্রকল্প শুধুমাত্র আর্থিক সহায়তা নয়, বরং রাজ্যের কৃষকদের জন্য এক স্থায়ী নিরাপত্তা ব্যবস্থা হিসেবে পরিচিতি লাভ করছে। আসুন জেনে নেওয়া যাক এই প্রকল্পের পুরো বিবরণ, সুবিধা, আবেদনের নিয়মকানুন,  যোগ্যতার মাপকাঠি ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা।

সম্পর্কিত পোস্ট

OBC নিয়ে নয়া মোড়! সুপ্রিম কোর্টের দোরগোড়ায় ঐতিহাসিক পদক্ষেপ! রইল বিস্তারিত - WB OBC Case Latest Update

প্রকল্পের সারাংশ

বিষয়বিবরণ
প্রকল্পের নামকৃষক বন্ধু (Krishak Bandhu)
সূচনা সময়কাল২০১৯ সাল
সংশ্লিষ্ট দপ্তরকৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তর, পশ্চিমবঙ্গ সরকার
উপকারভোগীকৃষক ও বৈধ বর্গাদার
বার্ষিক সহায়তাএকর প্রতি বছরে ₹১০,০০০ (দুই কিস্তিতে)
ন্যূনতম সহায়তা১ একরের কম জমি হলে বছরে ₹৪,০০০
পেমেন্ট পদ্ধতিDBT (সরাসরি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার)
মরসুমখরিফ ও রবি শস্য
মৃত্যুকালীন সহায়তা₹২ লক্ষ পর্যন্ত
বরাদ্দ২০২৫ খরিফে ₹২,৯৩০ কোটি টাকা

প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য

  1. কৃষকদের আর্থিক স্বাধীনতা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য
  2. চাষের মৌসুমে বীজ, সার ও অন্যান্য উপকরণ কেনার খরচ বহন করতে
  3. কৃষক পরিবারকে আকস্মিক মৃত্যুতে আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে
  4. কৃষি উৎপাদন এবং গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন সাধন করা

কৃষক বন্ধু প্রকল্পের প্রধান সুবিধা

১. আর্থিক সহায়তা – বছরে ₹১০,০০০

  • জমির মালিকানা থাকা কৃষকদের জন্য একর প্রতি বছরে সর্বোচ্চ ₹১০,০০০ পর্যন্ত সহায়তা করা হয়ে থাকে।
  • এই টাকা বছরে দুই কিস্তিতে দেওয়া হয়ে থাকল– খরিফ এবং রবি মৌসুমে।

২. ন্যূনতম সহায়তা – ₹৪,০০০

  • ১ একরের কম জমি থাকলেও কৃষকরা বছরে ₹৪,০০০ পর্যন্ত সহায়তা পেয়ে থাকেন ।

৩. মৃত্যুকালীন সহায়তা – ₹২ লক্ষ

  • কৃষকের বয়স যদি ১৮ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে হয়ে থাকে এবং তাঁর মৃত্যু ঘটে, তাহলে তাঁর পরিবার পায় ₹২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।

৪. সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা

  • সমস্ত টাকা সরাসরি DBT (Direct Benefit Transfer) এর মাধ্যমে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়ে থাকে।
  • দালাল বা মধ্যস্বত্বভোগীর কোনও সুযোগ এখানে নেই

২০২৫ সালে প্রকল্পের নতুন আপডেট

  • খরিফ মরসুমে ২০২৫ সালেও আর্থিক সহায়তা প্রদান ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে।
  • মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার এবছর ₹২,৯৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল শুধুমাত্র খরিফ মরসুমের জন্য।
  • প্রায় ১.০৯ কোটি কৃষক ও বর্গাদার এই প্রকল্পের সুবিধাভোগী আছেন।

প্রকল্পের অধীনে বরাদ্দ ও পরিসংখ্যান (২০১৯–২০২৫)

বিষয় বস্তুপরিমাণ
মোট বরাদ্দ (২০১৯–২০২৫)₹২৪,০৮৬ কোটি টাকা
মৃত্যুকালীন সহায়তা প্রাপ্ত পরিবার১.৪৬ লক্ষ+
মৃত্যুকালীন সহায়তা ব্যয়₹২,৯২০ কোটি টাকা

কারা এই প্রকল্পে আবেদন করতে পারবেন?

১. প্রাথমিক যোগ্যতা

  • আবেদনকারীর বয়স থাকতে হবে ১৮ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে
  • পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে 
  • আবেদনকারীকে হতে হবে:
    • জমির মালিক, অথবা
    • বৈধ বর্গাদার (অন্যের জমিতে চাষ করেন) এমন

প্রয়োজনীয় নথিপত্র 

আবেদন করতে গেলে নিম্নলিখিত ডকুমেন্টস বাধ্যতামূলক:

  1. ভোটার কার্ড বা আধার কার্ড (পরিচয় প্রমাণ) থাকতে হবে
  2. জমির মালিকানার দলিল বা রেকর্ড অফ রাইটস থাকতে হবে
  3. ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ডিটেইলস (IFSC সহ) থাকা
  4. পাসপোর্ট সাইজ রিসেন্ট রঙিন ছবি

আবেদনের পদ্ধতি (Offline)

ধাপ ১: আবেদনপত্র সংগ্রহ

  • স্থানীয় পঞ্চায়েত অফিস বা ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিস (BDO) থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে এর বর্তমানে আবেদন গ্রহণ চলছে কিনা। 

ধাপ ২: ফর্ম পূরণ ও ডকুমেন্ট সংযুক্তিকরণ

  • ফর্ম সঠিকভাবে পূরণ করে প্রয়োজনীয় নথিপত্রেট জেরক্স কপি ফর্মের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে ।

ধাপ ৩: ফর্ম জমা

  • সংশ্লিষ্ট অফিসে আবেদন ফর্ম জমা দিতে হবে যদি সরকারি নির্দেশনা থাকে। অফিস কর্তৃপক্ষ যাচাই-বাছাই করে আবেদন গ্রহণযোগ্য হলে ফাইনাল অ্যাপ্রুভাল দিতে পারে।

ধাপ ৪: টাকা প্রদান

  • আবেদন সফল হলে নির্ধারিত কিস্তিতে সরাসরি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করা হবে।

অনলাইন আবেদন পদ্ধতি (আসছে শীঘ্রই)

রাজ্য সরকার শীঘ্রই কৃষক বন্ধু প্রকল্পের জন্য অনলাইন আবেদন ওয়েবসাইট চালু করতে চলেছে, যেখানে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন, আবেদন ফর্ম ডাউনলোড ও স্ট্যাটাস চেক করা যাবে ঘরে বসে।

প্রকল্পের প্রভাব ও গুরুত্ব

  • কৃষকদের মধ্যে আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে
  • এরফলে মরসুমভিত্তিক চাষের পরিকল্পনা সহজ হয়েছে
  • সরকারী ভর্তুকি ও সহায়তার প্রতি কৃষকদের আস্থা বেড়েছে
  • মধ্যস্বত্বভোগী দালাল প্রথা অনেকটাই বন্ধ হয়েছে
  • গ্রামীণ অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হচ্ছে

সচরাচর প্রশ্ন (FAQ)

প্রশ্ন: জমির দলিল ছাড়া কি আবেদন করা যাবে?

উত্তর: না, জমির মালিকানা বা বৈধ চাষের প্রমাণ থাকা বাধ্যতামূলক হবে।

প্রশ্ন: কবে টাকা দেওয়া হয়ে থাকে?

উত্তর: বছরে দুটি কিস্তিতে – খরিফ (জুলাই–অগস্ট) ও রবি (ডিসেম্বর–জানুয়ারি) মরসুমে।

প্রশ্ন: অনলাইন আবেদন সম্ভব?

উত্তর: বর্তমানে মূলত অফলাইনে আবেদন করা হয়, তবে অনলাইন পদ্ধতি খুব শীঘ্রই চালু হবে।

প্রশ্ন: পেনশনভোগী কৃষক কি এই প্রকল্পে আবেদন করতে পারেন?

উত্তর: যদি বয়স ৬০ বছরের নিচে হয় এবং জমির মালিক হন, তাহলে আবেদন করতে পারবেন।

📢 Join Our Official Channels

Join WhatsApp Channel Join Telegram Channel

আরও পড়ুন

বাজারে এল AC ফ্যান নিয়ে স্মার্ট ফোন! ফিচারস জানলে চমকে উঠবেন - Realme Chill Fan Phone

Leave a Comment

error: Content is protected !!