ঘরে বসেই EWS,SC,STও PH সার্টিফিকেট হাতে পেয়ে যান, দেখুন বিস্তারিত – WB Cast Certificate Online

WB Cast Certificate Online:  বর্তমান সময়ে কাস্ট সার্টিফিকেট থাকা মানে একজন পড়ুয়া কিংবা চাকরি প্রার্থীর জন্য বিরাট স্বস্তির খবর এনে দেয়। বর্তমানে রাজ্য জুড়ে বেশ কিছু জাতিকে কাস্ট সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়ে থাকে। এবার দিনে দিনে এই প্রক্রিয়া আরও সহজ হয়ে উঠেছে। এবার আপনি ঘরে বসে অনায়াসে নিজের কাস্ট সার্টিফিকেট বানাতে পারবেন। আজকের প্রতিবেদনে পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দাদের জন্য কাস্ট সার্টিফিকেট সংক্রান্ত সমস্ত বিস্তারিত তথ্য দিতে যাচ্ছি –

পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দাদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কাস্ট সার্টিফিকেট রয়েছে, যা নানা সরকারি ও শিক্ষাগত সুযোগ-সুবিধা পেতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সার্টিফিকেটগুলোর মধ্যে চারটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হল — EWS (Economically Weaker Section), SC (Scheduled Caste), ST (Scheduled Tribe) ও PH (Physically Handicapped) সার্টিফিকেট। আর এই সমস্ত সার্টিফিকেট মূলত রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে ইস্যু করা হয় এবং আবেদনকারীকে নির্দিষ্ট কিছু যোগ্যতা ও নথিপত্র অনুযায়ী আবেদন জানাতে পারে।

সম্পর্কিত পোস্ট

সুসংবাদ! মহিলারা পাবেন ₹১৮,০০০ ও পুরুষরা ₹১৩,০০০ আর্থিক সহায়তা, জেনে নিন পুরো আবেদন পদ্ধতি -Labour Card Yojana 2025

চলুন এই আর্টিকেলে আমরা আর বিস্তারিতভাবে জানব:

  • EWS, SC, ST ও PH সার্টিফিকেট কারা পেতে পারেন?
  • কীভাবে আবেদন করতে পারবেন?
  • কী কী নথিপত্র এখানে লাগবে?
  • আবেদন করতে কোন অনলাইন পোর্টাল ব্যবহার করবেন?
  • আবেদনকারীদের জন্য সতর্কতামূলক কিছু পরামর্শ

 ১. EWS (Economically Weaker Section) সার্টিফিকেট

 যোগ্যতা:

EWS সার্টিফিকেট শুধুমাত্র সাধারণ (General) শ্রেণির ব্যক্তিরা পেতে পারেন যাঁরা SC, ST বা OBC সংরক্ষণের মধ্যে পড়ে না।

  • অবশ্যই পরিবারের মোট বাৎসরিক আয় ৮ লাখ টাকার কম হতে হবে। (সব উৎস থেকে আয় ধরা হবে)
  • নিচের সম্পত্তির সীমার মধ্যে থাকতে হবে:
    • কৃষিজমি ৫ একর-এর কম থাকলে
    • পৌরসভা এলাকায় ১০০ স্কয়ার ইয়ার্ডের কম জমি (বাড়ি বা প্লট) থাকলে
    • গ্রামীণ এলাকায় ২০০ স্কয়ার ইয়ার্ডের কম জমি থাকলে

 আবেদন পদ্ধতি:

  1. অনলাইনে অথবা অফলাইনে রাজ্য সরকারের নির্ধারিত পোর্টাল/অফিসে গিয়ে আবেদন করতে পারবেন।
  2. প্রয়োজনীয় নথিপত্র:
    1. ইনকাম সার্টিফিকেট
    2. পরিবারের সদস্যদের পরিচয়পত্র সমূহ
    3. আবাসিক ঠিকানার প্রমাণ
    4. আবেদনকারীর ছবি ও স্বাক্ষর
  3. আবেদন ফর্ম জমা দেওয়ার পরে সংশ্লিষ্ট দপ্তর আবেদন যাচাই করে সিদ্ধান্ত দেয়।

 ২. SC (Scheduled Caste) সার্টিফিকেট

 যোগ্যতা:

  • আবেদনকারীকে অবশ্যই রাজ্য সরকার স্বীকৃত তফশিলি জাতির (SC) তালিকাভুক্ত জাতিগুলির অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে ।
  • পরিবারিক বা জন্মসূত্রে জাতিগত প্রমাণ থাকা আবশ্যক এখানে (পিতামাতার জাতি অনুযায়ী)

 আবেদন পদ্ধতি:

  1. পশ্চিমবঙ্গে আবেদন করতে হবে পশ্চিমবঙ্গ অনগ্রসর শ্রেণী কল্যাণ দপ্তরের (Backward Classes Welfare Department) মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।
  2. প্রয়োজনীয় নথিপত্র:
    1. আবেদনকারীর আধার বা ভোটার কার্ড
    2. জন্ম সার্টিফিকেট বা স্কুল ছাড়পত্র ডকুমেন্ট
    3. পিতামাতার SC সার্টিফিকেট (যদি থাকে)
    4. আবাসিক প্রমাণপত্র
  3. আবেদন ফর্ম অনলাইনে পূরণ করা যায় (https://castcertificatewb.gov.in/)
  4. যাচাই প্রক্রিয়ার পর সার্টিফিকেট ই্যসু করা হয়।

 ৩. ST (Scheduled Tribe) সার্টিফিকেট

 যোগ্যতা:

  • আপনাকে অবশ্যই রাজ্যের তফশিলি উপজাতি (ST) তালিকাভুক্ত গোষ্ঠীর সদস্য থাকতে হবে।
  • নিজ গোষ্ঠীর ঐতিহ্য, ভাষা বা সংস্কৃতি অনুযায়ী পরিচয় থাকা জরুরি এখানে।

 আবেদন পদ্ধতি:

  1. আবেদন করতে হবে রাজ্যের ST দপ্তর বা জেলা সমাজকল্যাণ অফিসে গিয়ে। 
  2. প্রয়োজনীয় নথিপত্র:
    1. পরিচয়পত্র (আধার/ভোটার)
    2. গোষ্ঠীর জাতিগত প্রমাণ (পিতামাতার সার্টিফিকেট বা স্থানীয় প্রধানের ঘোষণা)
    3. বসবাসের প্রমাণ পত্র
  3. যাচাই প্রক্রিয়া ও স্থানীয় তদন্তের ভিত্তিতে অনুমোদন দেওয়া হয়।

বি. দ্র: ST সার্টিফিকেট ইস্যু করার সময় অনেক সময় ব্লক অফিসার বা SDM পর্যায়ে ভেরিফিকেশন হয়ে থাকে।

 ৪. PH (Physically Handicapped) সার্টিফিকেট

 যোগ্যতা:

  • যাঁদের শারীরিক অক্ষমতা ৪০% বা তার বেশি, তাঁরা সকলে PH (Divyangjan) সার্টিফিকেট পেতে পারেন।
  • অক্ষমতা হতে পারে দৃষ্টি, শ্রবণ, চলাচল, মানসিক বা অন্যান্য বিষয়ের উপর।

 আবেদন পদ্ধতি:

  1. আবেদন করতে হবে রাজ্যের সমাজকল্যাণ দপ্তর বা জেলা হাসপাতাল/মেডিকেল বোর্ডে যেতে হবে। 
  2. আবেদন ফর্ম পূরণের পর মেডিকেল বোর্ডের মাধ্যমে ফিজিক্যাল পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়ে থাকে।
  3. প্রয়োজনীয় নথি:
    1. মেডিকেল রিপোর্ট
    2. চিকিৎসকের রেফারেন্স
    3. পরিচয়পত্র ও ঠিকানার প্রমাণ
    4. ছবি
  4. মেডিকেল বোর্ড রিপোর্ট তৈরি করে সার্টিফিকেট ইস্যু করে।

 অনলাইন আবেদন পোর্টাল ও অফিসিয়াল লিংক (পশ্চিমবঙ্গ ভিত্তিক)

সার্টিফিকেটপোর্টাল লিংক
SC/SThttps://castcertificatewb.gov.in/
EWShttps://wb.gov.in অথবা সংশ্লিষ্ট জেলা পোর্টাল
PHজেলা হাসপাতাল বা পশ্চিমবঙ্গ সমাজকল্যাণ দপ্তর
অন্যান্য তথ্যhttps://backwardclasses.wb.gov.in

 সাধারণভাবে যেসব নথিপত্র প্রয়োজন হয়

  1. আবেদনকারীর পাসপোর্ট সাইজ ছবি থাকতে হবে (100KB JPG)
  2. আধার কার্ড / ভোটার কার্ড থাকা
  3. রেশন কার্ড (যদি থাকে)
  4. আয় সার্টিফিকেট (BDO/SDO অফিস থেকে)
  5. স্কুল ছাড়পত্র বা জন্ম সার্টিফিকেট থাক
  6. প্রয়োজন অনুযায়ী পিতামাতার সার্টিফিকেট থাকা জরুরি

কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা ও সতর্কতা

  1. ভুয়া তথ্য বা জাল নথি দিয়ে আবেদন করলে তার ফলাফল:
    1. সার্টিফিকেট বাতিল হতে পারে
    2. আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে
    3. ভবিষ্যতে সরকারি সুবিধা পাওয়া বন্ধ হয়ে যেতে পারে
  2. সময়সীমা: সাধারনত সার্টিফিকেট ইস্যু হতে ৭–৩০ দিন সময় লাগতে পারে।
  3. স্ট্যাটাস চেক: অনলাইনে ট্র্যাকিং আইডি দিয়ে আপনার আবেদনের অবস্থা দেখে নিতে পারবেন সহজেই।
  4. বৈধতার মেয়াদ: কিছু কিছু সার্টিফিকেট আজীবনের জন্য দেওয়া হয়ে থাকে , আবার কিছু সময়সীমা নির্ধারিত (যেমন: ইনকাম সার্টিফিকেট সাধারণত ১ বছরের জন্য)

 কোথায় যোগাযোগ করবেন?

আপনার আবেদন সংক্রান্ত কোনো সমস্যা হলে নিচের জায়গায় যোগাযোগ করতে পারেন:

  • আপনার ব্লকের BDO অফিসে গিসে
  • জেলা সমাজকল্যাণ আধিকারিকের দপ্তরে গিয়ে
  • কমন সার্ভিস সেন্টার (CSC) এ গিয়ে স্টাটাস চেক সংক্রান্ত 
  • স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস
  • রাজ্য সরকারের হেল্পলাইন নম্বর (যদি দেওয়া থাকে)

নিশ্চয় EWS, SC, ST ও PH সার্টিফিকেট হচ্ছে একজন নাগরিকের ন্যায্য অধিকার ও সুযোগ পাওয়ার প্রমাণ পত্র।  আপনি বা আপনার পরিবার যদি এসব ক্যাটাগরির আওতায় পড়েন, তাহলে দেরি না করে সঠিকভাবে আবেদন করে সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে নিতে পারেন। বর্তমানে অনলাইন পদ্ধতির মাধ্যমে সবকিছু অনেক সহজ হয়ে উঠেছে। শুধু প্রয়োজন সচেতনতা ও সঠিক নথিপত্রের।

📢 Join Our Official Channels

Join WhatsApp Channel Join Telegram Channel

আরও পড়ুন

দুঃসংবাদ! নতুন আধার কার্ড দেওয়া বন্ধ করলো সরকার, SIR চলাকালীন বিরাট পদক্ষেপ - Aadhaar card issuance stopped

Leave a Comment