Passport Colour Wise Benefit: একদিকে ভারতের বর্তমানে ভোটার কার্ড সংশোধন প্রক্রিয়া চলছে অন্যদিকে পাসপোর্টের বিভিন্ন রং নিয়ে অনেকের মনে সংশয় তৈরি হয়েছে। ভারতীয়দের মধ্যেই অনেকেই জানেন না এই বিভিন্ন রংয়ের পাসপোর্ট এর কাজ কি অথবা কোন কাজে কোন রঙের পাসপোর্ট ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় বিষয় হলো ভারতীয় নাগরিকত্ব পেতে বা নাগরিক হলে কোন রঙের পাসপোর্ট প্রয়োজনীয়। আজকের এই প্রতিবেদনে এই সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য দিতে যাচ্ছি
আমরা সকলে জানি, ভারতীয় নাগরিকদের পাসপোর্ট যে শুধু আন্তর্জাতিক ভ্রমণের একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করে, তা নয়। এটি এক ধরনের মৌলিক পরিচয়পত্রও বটে। আর এই পরিচয়ের মাধ্যমেই ইঙ্গিত মেলে, ভ্রমণকারী কোন শ্রেণির থেকে, কিসের জন্য তিনি ভ্রমণ করছেন এবং তাঁর নাগরিক মর্যাদা ঠিক কী প্রকার।
সম্পর্কিত পোস্ট
বিনামূল্যে প্রাইভেট চিকিৎসা, রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য কার্ড -দেখুন আবেদন পদ্ধতি - WB Shasthya Card 2025সাধারণত ভারতে মোট চার ধরনের পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়, যার প্রত্যেকটির রং আলাদা আলাদা হয়ে থাকে। এই রঙ অনুযায়ী ভ্রমণকারীর ধরণ নির্ধারিত হয়ে থাকে। চারটি রঙ হল—নীল, সাদা, লাল ও কমলা।
নীল পাসপোর্ট: সাধারণ নাগরিকদের জন্য
ভারতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত পাসপোর্ট হল নীল রঙের পাসপোর্ট। সাধারণ নাগরিকরা ব্যক্তিগত, ব্যবসায়িক কিংবা শিক্ষাগত বা অবসর যাত্রার জন্য এই পাসপোর্ট ব্যবহার করে থাকেন।
বর্তমানে নীল পাসপোর্টও ই-পাসপোর্ট রূপে ইস্যু করা হয়ে থাকে যেখানে একটি বায়োমেট্রিক চিপ যুক্ত করা হয়ে থাকে। এর মাধ্যমে ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স অনেক দ্রুত কটে এবং নিরাপদ হয়ে থাকে।
এই পাসপোর্ট পেতে হলে আধার কার্ড, ঠিকানার প্রমাণ, জন্ম সনদ ও নাগরিকত্বের প্রমাণ ডকুমেন্ট জমা করতে হবে।
সাদা পাসপোর্ট: সরকারি দায়িত্বে নিযুক্ত ব্যক্তিদের জন্য
এই পাসপোর্ট ব্যবহার করে সরকারি কাজে বিদেশ সফররত কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারের কর্মী হয়, প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা এই সাদা রঙের পাসপোর্ট পেয়ে থাকেন।
এই পাসপোর্টধারীদের বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয় ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে। সাদা পাসপোর্ট পেতে হলে ফরওয়ার্ডিং লেটার থাকা, দায়িত্ব সনদ থাকা, সরকারি পরিচয়পত্র থাককা এবং প্রধানমন্ত্রীর দফতরের (PMO) অনুমোদন অবশ্যই প্রয়োজন রয়েছে।
লাল পাসপোর্ট: কূটনৈতিক পরিচয়পত্র
সাধারণত লাল বা মেরুন রঙের পাসপোর্ট মূলত কূটনীতিক ও উচ্চ পর্যায়ের সরকারি কর্তাদের দেওয়া হয়ে থাকে। এই পাসপোর্টধারীরা কূটনৈতিক সুবিধা পেয়ে থাকেন, যেমন: ভিসা-মুক্ত ভ্রমণ, দ্রুত ভিসা প্রক্রিয়াকরণ সুবিধা, আন্তর্জাতিক সম্মান ইত্যাদি সুবিধা।
এই পাসপোর্ট সাধারণত কঠোর যাচাইয়ের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হয় এবং তা ইস্যু হয় শুধুমাত্র সরকারি অনুমোদিত ব্যক্তি বা তাঁদের পরিবারের সদস্যদের জন্য হয়ে থাকে।
কমলা পাসপোর্ট: ECR স্ট্যাটাসধারীদের জন্য
সাধারণত কমলা রঙের পাসপোর্ট ইস্যু করা হয় Emigration Check Required (ECR) ক্যাটাগরির অধীন ব্যক্তিদের জন্য। এটি মূলত কম শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন বা বিদেশে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত নাগরিকদের জন্য বরাদ্দ করা হয়ে থাকে।
এই ধরনের পাসপোর্টধারীদের ভ্রমণের পূর্বে অতিরিক্ত ইমিগ্রেশন চেকের মধ্য দিয়ে যেতে হতে পারে।
কেন এই রঙভিত্তিক শ্রেণিবিন্যাস?
পাসপোর্টের রঙ দেখেই ইমিগ্রেশন কর্মীরা প্রাথমিক ধারণা পেয়ে থাকেন ওই যাত্রীর উদ্দেশ্য ও পরিচয় সম্পর্কে সাধারণ তথ্য। এর ফলে প্রক্রিয়া আরও দ্রুত এবং নির্ভুল হয়ে থাকে।
পাসপোর্ট রঙ ও তার তাৎপর্য:
- নীল: ব্যক্তিগত বা সাধারণ ভ্রমণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়
- সাদা: সরকারি কাজে বিদেশ সফর কাজে ব্যবহৃত হয়
- লাল: কূটনৈতিক দায়িত্বে বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে
- কমলা: ECR ক্যাটাগরির বিদেশগামী কর্মীদের জন্য
আধুনিক ই-পাসপোর্ট প্রযুক্তি
বর্তমানে ভারতের সব ধরনের পাসপোর্ট ই-পাসপোর্ট হিসেবে ইস্যু করা হয়ে থাকল। এই নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে বিদেশ ভ্রমণ আরও সুরক্ষিত হবে এমনকি দ্রুত এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হতে পাবে।
সাধারণত ই-পাসপোর্টে যুক্ত RFID চিপের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত ও বায়োমেট্রিক তথ্য সংরক্ষিত থেকে থাকে। এতে পাসপোর্ট জালিয়াতি কম হবে এবং ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ হবে বলে জানা গিয়েছে।
তবে পাসপোর্ট মানেই শুধু কাগজের বই নয়, বরং এক একটি রঙ এক একটি বৈশিষ্ট্য বহন করে থাকে। তাই ভারতের পাসপোর্ট নীতিমালায় এই শ্রেণীবিন্যাস কেবলমাত্র প্রশাসনিক সুবিধার জন্য নয়, বরং নাগরিকের পরিচয়কে সুরক্ষিত ও শ্রেণিভুক্ত করার একটি আধুনিক পদ্ধতিও বটে।
পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার পর শুধু নাম বা মেয়াদ না দেখে রঙও দেখা জরুরি বিষয়—জেনে নিন আপনার এই নথি ঠিক কোন শ্রেণির অন্তর্গত রয়েছে। তবে যে প্রশ্ন সকলের মধ্যে ঘুরছে তা হল নাগরিকত্ব হিসেবে কোনো ভূমিকা আছে কিনা? তাহলে উত্তরে বলা যায়, সব রঙ ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রমাণ করে থাকে। এখানে শুধু আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্যের জন্য শ্রেণি আনা হয়েছে।

Aitpune is a experience content writer in various niches. I have 5 years experience in the field of content writing specially Bengali language. But i also work in English. So if any error done by me please forgive me.Thank You