Citizenship Smart Certificate 2025: এবার দেশবাসীর জন্য নতুন করে স্মার্ট নাগরিকত্ব সার্টিফিকেট দিতে চলেছে মোদি সরকার। এমনটাই বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় খবর পাওয়া যাচ্ছে। তাই আজকের প্রতিবেদনে আমরা জানবো কি সেই স্মার্ট কার্ড এবং কিভাবে এই স্মার্ট কার্ড পাওয়া যাবে এবং এতে আপনারা কি কি সুবিধা পাবেন। তাহলে এই প্রতিবেদনটি শেষ পর্যন্ত করুন আরো বিস্তারিত জানতে
আমাদের দেশে নাগরিকত্ব প্রমাণ নিয়ে বিগত কয়েক বছর ধরে একাধিক বিতর্ক চলছে, আইনি জটিলতা ও বিভ্রান্তিও দেখা দিচ্ছে। একদিকে এনআরসি এবং সিএএ নিয়ে রাজনৈতিক উত্তাপ আর কম নয়, অন্যদিকে নানা সরকারি নথিকে নাগরিকত্বের দলিল হিসাবে ধরা হবে কিনা তা নিয়ে মানুষের মনে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
সম্পর্কিত পোস্ট
সুসংবাদ! মহিলারা পাবেন ₹১৮,০০০ ও পুরুষরা ₹১৩,০০০ আর্থিক সহায়তা, জেনে নিন পুরো আবেদন পদ্ধতি -Labour Card Yojana 2025ঠিক এই প্রেক্ষাপটে জানা যাচ্ছে, মোদি সরকার এবার বড় সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে — সারা দেশের প্রতিটি বৈধ নাগরিকের জন্য চালু হতে চলেছে একটি ইউনিফায়েড ‘স্মার্ট সিটিজেনশিপ কার্ড’। এই সার্টিফিকেটে থাকবে সরকারের ডিজিটাল ডাটাবেসে রেজিস্টার্ডও এবং এতে থাকবে এমন সব ফিচার যা একে একটি বৈধ নাগরিকত্ব প্রমাণপত্রে রূপান্তরিত করতে চলেছে।
কেন এই স্মার্ট কার্ড চালু হচ্ছে
বর্তমান সময়ে ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, রেশন কার্ড, পাসপোর্ট, প্যান কার্ড ইত্যাদি ডকুমেন্টস থাকলেও, এর কোনটিই এককভাবে ভারতের নাগরিকত্ব প্রমাণ করে না বলে জানা যাচ্ছে । এমনকি সুপ্রিম কোর্ট ও নির্বাচন কমিশনের ব্যাখ্যা অনুযায়ী ভোটার আইডি এবং আধার কেবলমাত্র পরিচয় পত্র হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবে মাত্র, নাগরিকত্ব নয়। এছাড়া জন্ম সনদ বা পাসপোর্ট থাকলে নাগরিকত্বের ভিত্তি স্থাপন করা গেলেও অনেক ভারতীয়ের কাছে এই নথি নেই বললেই চলে। ফলে নানা কাজে নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে গিয়ে সমস্যার মুখোমুখি হতে পারে অনেকেরই। এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে সরকার আনছে একটি ডিজিটাল ও নিরাপদ সমাধান সার্টিফিকেট— স্মার্ট সিটিজেনশিপ কার্ড।
কী থাকবে এই স্মার্ট কার্ডে
জানা যায়, এই স্মার্ট সিটিজেনশিপ কার্ডে থাকবে একাধিক আধুনিক প্রযুক্তি-ভিত্তিক নিরাপত্তা ফিচার থাকতে পারে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে প্রস্তাবিত ফিচারগুলোর মধ্যে রয়েছে:
- নাগরিকের পূর্ণ নাম
- জন্ম তারিখ ও জন্ম স্থান
- পিতা-মাতার নাম
- নাগরিকের স্থায়ী ঠিকানা
- একটি ইউনিক সিটিজেনশিপ নম্বর
- ডিজিটাল স্বাক্ষর
- হাই সিকিউরিটি কোড এবং QR স্ক্যান ফিচার
- বায়োমেট্রিক তথ্য সংযুক্ত করার সম্ভাবনা থাকছে
- কেন্দ্রীয় সার্ভারে সংরক্ষিত নাগরিক তথ্য
এই কার্ড ব্যবহার করে ভবিষ্যতে সব রকম সরকারি পরিষেবা গ্রহণ করা যাবে এমনকি সরকারি চাকরির জন্য আবেদন, নির্বাচন সংক্রান্ত প্রক্রিয়া এবং আইনি নথিপত্র যাচাইয়ে নাগরিকত্ব সহজে প্রমাণ করা যাবে এর মাধ্যমে।
বর্তমান নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী প্রমাণের নিয়ম কী
ভারতের নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী,
- ২৬ জানুয়ারি ১৯৫০ থেকে ১ জুলাই ১৯৮৭-এর মধ্যে ভারতে জন্ম হলে নাগরিকত্ব পাবে।
- ১ জুলাই ১৯৮৭ থেকে ৩ ডিসেম্বর ২০০৪-এর মধ্যে জন্ম হলে বাবা বা মায়ের মধ্যে অন্তত একজনকে ভারতের নাগরিক প্রমাণ হতে হবে।
- ৩ ডিসেম্বর ২০০৪-এর পরে জন্ম হলে বাবা-মা দুজনকেই নাগরিক প্রমাণ করতে হবে।
আর এই সমস্ত শর্ত প্রমাণে প্রয়োজন হয় জন্ম সনদ, স্কুলের রেকর্ড, পাসপোর্ট বা অন্যান্য ইত্যাদি। কিন্তু, বাস্তবে দেশের একটি বিশাল সংখ্যক মানুষের কাছে এই নথিগুলি একেবারেই নেই, বা অনেক ক্ষেত্রেই সেগুলি সঠিক নয় বলে রিপোর্ট। এর ফলে নাগরিকত্ব প্রমাণে দুর্ভোগ হয়।
নাগরিকত্ব প্রমাণে সমস্যা কোথায় হচ্ছে
বর্তমানে দেখা যাচ্ছে অনেক রাজ্যে ভুয়ো ভোটার বা অবৈধ অভিবাসী চিহ্নিত করতে গিয়ে সাধারণ মানুষকেই হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী অঞ্চল বা গ্রামীণ এলাকায় বহু মানুষের কাছে বৈধ নাগরিকত্ব সংক্রান্ত কাগজপত্র ঠিকঠাক নেই। অনেকেই শুধুমাত্র আধার বা ভোটার আইডি দেখাতে পারেন, যেগুলি যথেষ্ট নয় বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে এই প্রেক্ষাপটে সরকার একবারে কেন্দ্রীয় তথ্যভাণ্ডারে দেশের প্রতিটি নাগরিককে যুক্ত করে একটি ডিজিটাল ও ইউনিফায়েড নাগরিকতা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাইছেন।
স্মার্ট সিটিজেনশিপ কার্ড চালুর উদ্দেশ্য
- ভুয়ো ভোটার তালিকা পরিশোধন করা
- অবৈধ অভিবাসী চিহ্নিতকরণ সহজ করে দেওয়া
- নাগরিকত্ব নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করে দেওয়া
- সরকারিভাবে প্রমাণযোগ্য ও একক নাগরিকত্ব নথি প্রদান করা
- কেন্দ্রীয় নাগরিক তথ্যভাণ্ডার গঠন করা
- ডিজিটাল প্রশাসনের প্রসার ঘটানোর জন্য
কারা পাবেন এই স্মার্ট কার্ড
সাধারণত সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, যাঁরা বৈধভাবে নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে পারবেন, তাঁরা এই কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন। বিশেষ করে যাঁদের কাছে বর্তমানে নাগরিকত্ব সংক্রান্ত নথি নেই, তাঁদের ক্ষেত্রেও বিকল্প ব্যবস্থা রাখা হতে পারে বলে জানা যায় — যেমন বাবা-মা’র নামের ভিত্তিতে যাচাই করা, স্থানীয় গ্রাম বা পৌরসভা সনদ এর মাধ্যমে, স্কুল রেকর্ড প্রভৃতি যাচাই করে কার্ড ইস্যু করা হতে পারে।
জানা যায়, এই প্রকল্প ধাপে ধাপে রোলআউট করা হবে এবং সম্ভবত প্রথম পর্যায়ে কিছু নির্বাচিত রাজ্যে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে চালু করা হতে পারে।
কীভাবে আবেদন করবেন এই স্মার্ট কার্ডের জন্য
সরকারি ওয়েবসাইট বা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পরিকল্পনা তৈরি হচ্ছে। এর পাশাপাশি, CSC (Common Service Center) বা BDO অফিস থেকেও আবেদন করা যেতে পারে। নিচে প্রাথমিকভাবে যে ধরণের তথ্য চাওয়া হতে পারে, তা উল্লেখ করা হলো:
- নাম, ঠিকানা, পিতা-মাতার নাম
- জন্মের তথ্য সমূহ
- নাগরিকত্বের বিদ্যমান প্রমাণ পত্র
- আধার / ভোটার আইডি / রেশন কার্ড
- পাসপোর্ট (যদি থাকে)
- একটি সাম্প্রতিক পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- মোবাইল নম্বর
আবেদনের পরে সমস্ত নথি যাচাই করা হবে, তথ্য সঠিক হলে কেন্দ্রীয় সার্ভারে রেজিস্টার করে কার্ড ইস্যু করা হতে পারে।
বিরোধীদের মতামত
দেশে এই স্মার্ট কার্ড চালু নিয়ে বিরোধীদের মধ্যে কিছুটা সন্দেহ দেখা দিচ্ছে। তাঁদের মতে,
- এটি এনআরসি বা সিএএ-র মতো বিতর্কিত প্রকল্পে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে
- এর ফলে সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হতে হবে
- কার্ড না থাকলে সরকারি সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে পারেন সাধারণ জনগণ
তবে অন্যদিকে কেন্দ্র বলছে, এই কার্ড বাধ্যতামূলক নয়, বরং সবার নাগরিকত্বকে বৈধভাবে নথিভুক্ত করার একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়া হবে কেবল এটি মূলত জনস্বার্থেই তৈরি করা হচ্ছে এবং নাগরিকদের ডিজিটাল ক্ষমতায়ন ঘটতে সক্ষম হবে।
সম্ভাব্য সুফল
- প্রতিটি নাগরিকের পরিচয় ও নাগরিকত্ব স্পষ্ট হয়ে যাবে
- এর ফলে ভোটার তালিকা হবে বিশুদ্ধ
- অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা সহজ হবে
- সরকারি পরিষেবা গ্রহণে জটিলতা অনেকটা কমবে
- একাধিক নথি বহনের প্রয়োজনও কমবে
- বিদেশে নাগরিকত্ব প্রমাণে সহায়তা হতে চলেছে
কবে থেকে চালু হতে পারে
এদিকে সরকারি সূত্র অনুযায়ী, ২০২৬ সালের মধ্যেই সারা দেশে স্মার্ট সিটিজেনশিপ কার্ড চালু করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে । তবে ২০২৫ সালের শেষ দিকেই পাইলট ফেজ চালু হতে পারে কিছু রাজ্যে বলে জানা যাচ্ছে। এই কার্ড সংক্রান্ত বিস্তারিত গাইডলাইন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক প্রকাশ করলেই আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করা হতে পারে বলে জানা যাচ্ছে।
পরিশেষে বলা যায় ভারতের মতো জনবহুল দেশে যদি এই ব্যবস্থা চালু করা হয় তাহলে অনেকেরই সুবিধা হবে। তবে এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ভাবে হতে হবে। যদি এক দেশের এক স্মার্ট কার্ড সুবিধা থাকে তাহলে ভারত ছাড়াও দেশের বাইরেও নিজের প্রমাণপত্র সহজেই প্রমাণ করা যাবে। তবে সারাদেশে এই স্মার্ট কার্ড প্রধান প্রক্রিয়া চালু হলে বিরোধীদের মধ্যে থেকে অনেক অস্বস্তির খবর আসতে পারে। কেননা যে কোন পরিবর্তন করলে সাধারণ মানুষের অনেক হয়রানি হয়ে থাকে। তবে ভারতের মতো দেশে এমন একটা স্মার্ট কার্ড সবাই হাতে পেলে নিশ্চিন্তে দিন কাটাতে পারবেন।
disclaimer :তবে এই সংক্রান্ত এখনো পর্যন্ত সরকারিভাবে কোন আপডেট পাওয়া যায়নি।যদিও বিভিন্ন নিউজ পোর্টালের মাধ্যমে এই তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে তবে এখনো পর্যন্ত এর স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানতে অবশ্যই সরকারি আপডেট ফলো করবেন।

Aitpune is a experience content writer in various niches. I have 5 years experience in the field of content writing specially Bengali language. But i also work in English. So if any error done by me please forgive me.Thank You