পুজোর আগেই রাজ্য সরকারি কর্মীদের বেতন, কেন্দ্রকে টেক্কা দিল নবান্ন – জানুন কবে মিলবে বেতন ও পেনশন – WB Govt Employees Update

WB Govt Employees Update:  রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের জন্য ফের পুজোর আগে বড়সড় সুখবর! এই বছর দুর্গাপুজোর ছুটি পড়ার আগেই বেতন নিয়ে সুসংবাদ ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের ঘোষণার ঠিক পরেই এমন সিদ্ধান্তে রাজনৈতিকভাবে এক ধাপ এগিয়ে গেল নবান্ন বলে অভিজ্ঞ মহলের দাবি। 

রদজ্য অর্থদপ্তরের তরফে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫) প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছে – সেপ্টেম্বর মাসের কর্মীদের বেতন ও অন্যান্য আর্থিক প্রাপ্তি নিয়ে দারুণ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকারি কর্মীদের মধ্যে এই ঘোষণার পরেই স্বস্তি ও খুশির বার্তা বহন করছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মমতা দিচ্ছে কন্যা বিবাহের জন্য 25,000 টাকা! শুধু এই কাজ করলে কেল্লাফতে - WB Govt Scheme

কবে মিলবে সেপ্টেম্বর মাসের বেতন? কী বলছে সরকারি বিজ্ঞপ্তি?

মঙ্গলবার প্রকাশিত রাজ্য অর্থদপ্তরের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী:

  • চলতি মাসের ২৪ এবং ২৫ ২০২৫ তারিখে রাজ্য সরকারি কর্মীদের সেপ্টেম্বর মাসের বেতন দেওয়া হবে।
  • তার পাশাপাশি, গ্র‌্যান্ট ইন এইড কর্মচারীদের বেতন, ওয়েজেস, রেমুনারেশন, স্টাইপেন্ড এবং অনারারিয়ামও উক্ত দিনেই দেওয়া হয়।
  •  তবে পেনশনভোগীরা তাঁদের পেনশন পাবেন আগামী ১ অক্টোবর ২০২৫

রাজ্য সরকারের এই নির্দেশনার ফলে লক্ষাধিক কর্মচারীর মুখে হাসি ফুটবে, যা নিঃসন্দেহে উৎসবের মুখে বড় স্বস্তি হয়েছে।

পুজোর ছুটি শুরুর আগেই কেন এই সিদ্ধান্ত?

চলতি বছরে পশ্চিমবঙ্গে দুর্গাপুজোর ছুটি শুরু হচ্ছে ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সাল থেকে, যা চলবে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত। দীর্ঘ এই ছুটির সময় সাধারণত সরকারিভাবে লেনদেন বন্ধ থেকে থাকে। তাই সরকারি কর্মীদের হাতে উৎসবের আগেই বেতন পৌঁছে দিতে রাজ্য সরকার এহেন রাস্তা নিয়েছে।

আমরা সকলে জানি, পুজো হল বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব। এক্ষেত্রে কেনাকাটা, নতুন জামাকাপড়, বাড়ির সংস্কার কাজ, আত্মীয়স্বজনদের উপহার দেওয়া – সব মিলিয়ে এই সময় আর্থিক প্রয়োজনতা বেশি থাজে। এর ফলে বেতন আগেই মিটিয়ে দেওয়া মানেই কর্মীদের জন্য দারুণ স্বস্তি হতে পারে।

কেন্দ্রকে টেক্কা দিল রাজ্য সরকার?

উল্লেখযোগ্যভাবে বলা যায়, কেন্দ্রীয় সরকার সম্প্রতি ঘোষণা করেছে যে ২৬ সেপ্টেম্বর তারিখে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা তাঁদের সেপ্টেম্বর মাসের বেতন প্রদান করা হবে। সেই ঘোষণাকে টেক্কা দিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার আরও আগেই, অর্থাৎ ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে বেতন দেওয়ার কথা ঘোষণা করে দিলেন।

রাজনৈতিক মহলের মতে, এই পদক্ষেপ রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ হতে চলেছে। কারণ আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনের আগে কেন্দ্র ও রাজ্য – উভয়েই সরকারি কর্মীদের মন জয় করতে ব্যস্ত রয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই এই ঘোষণার তুলনা করা শুরু করে দিয়েছে।

অন্যান্য সরকারি প্রকল্পের টাকা কবে?

শুধু তাই নয়,পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পের অর্থও সেপ্টেম্বর মাসে আগাম প্রদান করা হবে:

  1. জয় বাংলা
  2. লক্ষ্মীর ভাণ্ডার
  3. কন্যাশ্রী
  4. বিধবা ও বার্ধক্য ভাতা

এইসব প্রকল্পের ডিবিটি অর্থ (Direct Benefit Transfer) উপভোক্তাদের ১ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এর জন্য রাজ্যের অর্থদপ্তর সংশ্লিষ্ট ডিডিও ও ডিপোজিট অ্যাকাউন্টের অ্যাডমিনিস্ট্রেটরদের নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে ট্রেজারিতে বিল জমা দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন, যাতে সময়মতো টাকা পাঠানো হয়ে থাকে।

কর্মীদের প্রতিক্রিয়া: খুশি, তবে আরও প্রত্যাশা

রাজ্য সরকারের এই আগাম বেতন ঘোষণায় বেশিরভাগ রাজ্য সরকারি কর্মীই খুশি হয়েছেন। অনেকে বলছেন, “পুজোর আগে টাকা পেলে বাজার করা, আত্মীয় বাড়ি যাওয়া, নতুন জামাকাপড় কেনা – সবই সময়মতো ও সহজ হবে।”

তবে অন্যদিকে বহু কর্মী জানাচ্ছেন, “শুধু পুজোর সময়ই নয়, প্রতি মাসে নির্দিষ্ট সময়ে বেতন পেলে আরও ভালো হতে পারে। কারণ মাসের শেষের দিকে অনেক সময় বেতন আসতে দেরি হয়ে থাকে , যা সমস্যার কারণ হয়।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষণ: ভোটের আগে মন জয়?

এদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার – উভয়েই ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘মন জয়ের লড়াই’-এ নেমেঋে। এরকম পরিস্থিতিতে সরকারি কর্মীদের খুশি রাখতে এই ধরনের পদক্ষেপ কার্যকর করা হয়েছে বলে জানা যায়।

একদিকে যেমন কর্মীরা সন্তুষ্ট হয়েছেব, অন্যদিকে এতে সরকারের ভাবমূর্তিও আরও উজ্জ্বল হচ্ছে। তবে অনেক অর্থনীতিবিদ জানাচ্ছেন, “এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে রাজ্য সরকার নিশ্চয়ই তাদের ক্যাশ ফ্লো এবং রাজস্ব আয় বিবেচনা করে নিয়েছে, যাতে কোনও রকম ঋণের চাপে পড়তে না হয় দপ্তরকে।”

উৎসবের মরসুমে এক স্বস্তির হাওয়া

তাই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই সিদ্ধান্ত শুধুই সরকারি কর্মীদের জন্য নয়, পুরো রাজ্যের অর্থনীতির জন্যই একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হতে পারে। কারণ উৎসবের সময় যখন মানুষের হাতে যেন নগদ টাকা থাকে, তখন কেনাকাটা আরও বাড়ে, খুচরো ব্যবসায় গতি আরও আসে, এবং সামগ্রিকভাবে আর্থিক চক্র সক্রিয় হয়ে থাকে।

যদিও কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে কে আগে ঘোষণা করল তা নিয়ে রাজনৈতিক তর্কও কম নেই, তবে আসল বাস্তবতা হল – এই ঘোষণার ফলে উপকৃত হচ্ছেন রাজ্যের লক্ষাধিক  সরকারি কর্মচারী ও উপভোক্তাগন। আর এটাই সবথেকে বড় কথা।

আরও পড়ুন

প্যান কার্ড থাকলেই 5 লাখ তাৎক্ষণিক লোন! ঘরে বসে নিয়ে ফেলুন সুযোগ - Pan Card Instant Loan Idea

Leave a Comment

error: Content is protected !!