OBC নিয়ে নয়া মোড়! সুপ্রিম কোর্টের দোরগোড়ায় ঐতিহাসিক পদক্ষেপ! রইল বিস্তারিত – WB OBC Case Latest Update

WB OBC Case Latest Update: পশ্চিমবঙ্গের ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে আইনি লড়াই ফের একটি নতুন গতি নিয়েছে।যদিও কলকাতা হাইকোর্টের একাধিক রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা গড়িয়েছে এবং ফের এই সংক্রান্ত শুনানির জন্য চলতি মাসে তালিকাভুক্ত হয়েছে। এই মামলার রায় একদিকে যেমন রাজ্যের রাজনৈতিক ভারসাম্যকে প্রভাবিত করবে, তেমনই বহু পিছিয়ে পড়া মানুষের জীবনে নানা বদলে দিতে পারে।

হাইকোর্টের রায় ও বিতর্কিত ওবিসি তালিকা

জানা যায়, এই বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের ১৭ জুন, ২০২৫-এর ঐতিহাসিক রায়দান। এদিলে হাইকোর্টে দায়ের হওয়া একাধিক জনস্বার্থ মামলা অনুযায়ী প্রশ্ন তোলা হয় রাজ্য সরকারের নতুন ওবিসি তালিকার বৈধতা নিয়ে।এই নিয়ে অভিযোগ ওঠে, রাজ্য সরকার রাজনৈতিক স্বার্থে বিশেষ সম্প্রদায়কে ওবিসি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করছে, সঠিক সমাজতাত্ত্বিক সমীক্ষা ছাড়াই।

সম্পর্কিত পোস্ট

রাজ্যে সুফল বাংলা প্রকল্প, কৃষক ও শহরবাসীর জন্য দারুণ সুযোগ - WB Sufal Bangla Scheme

তারপর কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্যের ১৪০টি সম্প্রদায়কে নিয়ে গঠিত নতুন ওবিসি তালিকার উপর স্থগিতাদেশ জারি করে দেয়। এরপর এই রায় রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে আলোড়ন তোলে এবং তারপরে সরকার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়।

সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ ও নতুন শর্ত

গত ২২ ও ২৮ আগস্ট, ২০২৫ তারিখে সুপ্রিম কোর্ট এই বিষয়ে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করে।এদিন শীর্ষ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, WBJEE (ওয়েস্ট বেঙ্গল জয়েন্ট এন্ট্রান্স এগজামিনেশন)-এর ফলাফল ও ভর্তি প্রক্রিয়া আপাতত চালু থাকবে শুধুমাত্র ৬৬টি প্রাক-অনুমোদিত ওবিসি সংরক্ষণ শ্রেণির জন্য, যাদের বৈধতা ২০১০ সালের আগেই প্রমাণ আছে।

শীর্ষ আদালত কর্তৃক এই রায়ে স্পষ্টভাবে জানানো হয় , বাকি ১৪০টি সম্প্রদায়ের ওবিসি সংরক্ষণ বৈধ কি না, তা চূড়ান্ত শুনানির মাধ্যমে নির্ধারিত করা হবে। এই নির্দেশ রাজ্য সরকারের জন্য এক অস্বস্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে, বিশেষ করে WBJEE-এর মতো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার ক্ষেত্রে ।

রাজনৈতিক অভিঘাত: রাজ্য বনাম বিরোধীপক্ষের অবস্থান

এই মামলায় রাজনৈতিক চাপ ও পাল্টা চাপ প্রবল হয়ে দেখা যায়। রাজ্য সরকারের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন বিশিষ্ট আইনজীবী কপিল সিব্বলও, যিনি দাবি করেছেন যে সংরক্ষণের এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ সংবিধানসম্মত হয়েছে এবং এটি কোনওভাবেই “আনুপাতিক রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব” হবে না। তিনি আরও দাবি করেন, পূর্ববর্তী যে সমীক্ষা ও রিপোর্টের ভিত্তিতে এই সম্প্রদায়গুলি তালিকাভুক্ত করা হয়, তা যথাযথ ও বৈজ্ঞানিক।

সংরক্ষণের সংবিধানিক কাঠামো ও প্রশ্ন

রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতীয় সংবিধানে সামাজিক ও শিক্ষাগতভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির জন্য সংরক্ষণে অর্ন্তভুক্তি দেওয়া হয়েছে। তবে এই সংরক্ষণ দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকে বৈজ্ঞানিক ও পরিসংখ্যানভিত্তিক সমীক্ষা করে রিপোর্ট তৈরি করতে হয় এবং এটি কেন্দ্র বা রাজ্য স্তরের কমিশনের মাধ্যমে অনুমোদিত হতে হয়।

এদিকে এই মামলায় একটি বড় প্রশ্ন হচ্ছে—পশ্চিমবঙ্গ সরকার সেই প্রয়োজনীয় সমীক্ষা ও কমিশনের অনুমোদন নিয়েছিল কি না? যদি তা না নিয়ে থাকে, তবে সংরক্ষণ দেওয়া সংবিধানিকভাবে অবৈধ হবে।

ওবিসি সম্প্রদায়ের আশঙ্কা ও প্রত্যাশা

এই আইনি টানাপোড়েনে সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হচ্ছেন ওবিসি সম্প্রদায়ের সাধারন মানুষজন। শিক্ষা ও চাকরিতে সংরক্ষণই ছিল তাদের কাছে উপরে উঠে আসার অন্যতম সুবিধা। এখন এই সংরক্ষণ যদি বাতিল হয় কিংবা সীমাবদ্ধ হয়ে থাকে, তাহলে তারা একেবারে মূলস্রোত থেকে ছিটকে পড়তে পারে ।

অন্যদিকে যারা ইতিমধ্যেই ১৪০ সম্প্রদায়ের অন্তর্গত হয়ে ফর্ম পূরণ করে ফেলেছেন এমনি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন বা চাকরির জন্য আবেদন করে ফলেছেন তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রবল অনিশ্চয়তা তৈরি হতে পারে।

ভবিষ্যতের দিশা: ৯ই সেপ্টেম্বরের শুনানিকে ঘিরে উত্তেজনা

সুপ্রিম কোর্টে আগামী ৯ই সেপ্টেম্বর এই ওবিসি মামলার শুনানি নির্ধারিত হয়েছে বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি বিক্রম নাথের বেঞ্চে। এই শুনানিতেই বিরোধী পক্ষ নতুন কিছু ডেটা ও যুক্তি পেশ করতে পারে বলে জানা যাচ্ছে, যা আদালতের সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলতেও পারে ।

এদিকে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই শুনানি সাধারণ মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। যদি সুপ্রিম কোর্ট মনে করেন যে নতুন এবিসি তালিকায় রাজ্য সরকার যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করেনি, তাহলে পুরো তালিকাই বাতিল হতে পারে। অপরদিকে যদি রাজ্যের পক্ষে পর্যাপ্ত তথ্য ও নথি থেকে থাকে, তাহলে এই তালিকাকে অনুমোদনও দেওয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা।

এখান দেখার বিষয় ৯ সেপ্টেম্বর মামলা কোন দিকে গড়ায়।একদিকে শীর্ষ আদালতের দিকে তাকিয়ে থাকা লক্ষ লক্ষ পিছিয়ে পড়া সাধারণ মানুষ অন্যদিকে তাদের হাহাকার। সবটাই এখন নাগালের বাইরে। আগামী শোনানি সবকিছুই স্পষ্ট করতে চলেছে। তাই এখন সব থেকে বড় বিষয় হলো অপেক্ষা করা।৯ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট কি নির্দেশ দেয় না-কি আরও নতুন দিন গুনতে হবে? সঙ্গে থাকুন পরবর্তী আপডেট পেতে।

📢 Join Our Official Channels

Join WhatsApp Channel Join Telegram Channel

আরও পড়ুন

বাজারে এল AC ফ্যান নিয়ে স্মার্ট ফোন! ফিচারস জানলে চমকে উঠবেন - Realme Chill Fan Phone

Leave a Comment

error: Content is protected !!